জাপানের উচ্চকক্ষের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) এবং তার জোটসঙ্গী কোমিতো তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, এলডিপি প্রায় ৩৪টি আসন এবং কোমিতো প্রায় ৭টি আসন পেয়েছে, যা তাদের সম্মিলিত আসন সংখ্যা ১২৫-এর নিচে নেমে গেছে। এই ফলাফল প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার প্রশাসনের জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে যখন জাপানকে ১ আগস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করতে হবে।
নির্বাচনের আগে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাপানি পণ্যের উপর ২৫% শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে, প্রধানমন্ত্রী ইশিবা এবং জাপানের প্রধান বাণিজ্য আলোচক রিওসেই আকাজাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টের সাথে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে, বেসেন্ট একটি "ভাল চুক্তি" অর্জনের সম্ভাবনা সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, তবে নির্দিষ্ট শর্তাবলী নিয়ে আলোচনা হয়নি।
অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃবন্দ উরসুলা ভন ডার লেইন এবং আন্তোনিও কোস্তা টোকিও সফরে এসে জাপানের সাথে একটি "প্রতিযোগিতা জোট" স্বাক্ষর করেছেন। এই জোটের লক্ষ্য বিরোধী শুল্ক এবং রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে গ্লোবাল ফ্রি ট্রেড সমর্থন করা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ক্ষমতাসীন জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানো জাপানের অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। দুর্বল সরকার বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমাতে পারে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে। বাণিজ্য চুক্তিগুলি জাপানের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং দুর্বল সরকার বাণিজ্য আলোচনায় সুবিধাজনক অবস্থানে নাও থাকতে পারে, যা রপ্তানি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে প্রভাবিত করবে।
সুতরাং, জাপানের ২০২৫ সালের উচ্চকক্ষ নির্বাচন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বাণিজ্য আলোচনা এবং দেশের অর্থনৈতিক নীতির উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। বিনিয়োগকারী এবং নীতিনির্ধারকদের জাপানের অর্থনীতির উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব মূল্যায়নের জন্য পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।