কগনিটিভ শাফলিং: মন শান্ত করে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ার একটি সহজ কৌশল
ঘুমোতে সমস্যা হচ্ছে অথবা রাতে বার বার ঘুম ভেঙে যাচ্ছে? ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি, 'কগনিটিভ শাফলিং' নামক একটি কৌশল সাহায্য করতে পারে।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সাইমন ফ্রেজার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. লুক বোডুইন এই পদ্ধতিটি উদ্ভাবন করেছেন। এর লক্ষ্য হল মস্তিষ্ককে ঘুম পাড়ানোর জন্য 'প্রতারণা' করা। বোডুইন নিজে ঘুমের সমস্যায় ভুগছিলেন, তাই তিনি মস্তিষ্কের ঘুম নিয়ন্ত্রণকারী সিস্টেম বোঝার মাধ্যমে একটি সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন।
কগনিটিভ শাফলিংয়ের মধ্যে রয়েছে এলোমেলো, নৈর্ব্যক্তিক এবং আবেগহীন শব্দ তৈরি করা। নির্বাচিত শব্দটির প্রতিটি অক্ষরের জন্য, সেই অক্ষর দিয়ে শুরু হওয়া অন্য শব্দগুলি কল্পনা করুন এবং প্রতিটি ছবি পাঁচ থেকে আট সেকেন্ডের জন্য মনে ধরে রাখুন, তারপর অন্য শব্দে যান।
উদাহরণস্বরূপ, 'glasses' শব্দটি ব্যবহার করে, কেউ 'goat, grass, galaxy, guitar' ইত্যাদি কল্পনা করতে পারে। এই কৌশলটি উদ্বেগ থেকে মনোযোগ সরিয়ে এবং আরও স্বচ্ছন্দ মানসিক অবস্থা তৈরি করে শান্তির অনুভূতি বাড়াতে পারে।
ঘুম বিশেষজ্ঞ এবং নিউরোলজিস্ট ড. ফারিহা আব্বাসি-ফেইনবার্গ এই পদ্ধতির সমর্থন করেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে এটি সচেতন চিন্তাভাবনা থেকে মনোযোগ সরিয়ে মস্তিষ্ককে শান্ত করে।
বোডুইন উল্লেখ করেছেন যে কগনিটিভ শাফলিং ঘুমের স্বাভাবিক শুরুকে অনুকরণ করে। এই পর্যায়ে, মানুষ প্রায়শই 'মাইক্রোস্লিপ' এবং অ-রৈখিক চিন্তাভাবনার অভিজ্ঞতা লাভ করে, তাই এলোমেলো চিন্তায় জড়িত হওয়া সেই অবস্থায় প্রবেশ করতে এবং ঘুমোতে সাহায্য করতে পারে।
এখানে কোনো কঠোর নিয়ম নেই, তবে ২০ মিনিট পরেও যদি ঘুম না আসে এবং খারাপ লাগতে শুরু করে, তাহলে বিছানা থেকে উঠে কোনো শান্ত কাজে নিজেকে নিযুক্ত করুন। জার্নাল লেখা, ধ্যান করা অথবা হালকা গরম জলে স্নান করার কথা বিবেচনা করতে পারেন।
কৌশলটি কতটা কার্যকর তা মূল্যায়ন করার জন্য কয়েক রাত ধরে এটি চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন এটি সঠিক ঘুমের অভ্যাসের বিকল্প নয়।