শিশু বিবাহ একটি গুরুতর আন্তর্জাতিক সমস্যা, যা বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মেয়ের জীবনকে প্রভাবিত করে। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে, এই সমস্যাটি মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং একটি সামাজিক অবিচার হিসাবে বিবেচিত হয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, যেমন ইউনিসেফ, শিশু বিবাহের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং এর অবসানের জন্য কাজ করছে। তাদের মতে, প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ মেয়ে শিশু বিবাহের শিকার হয়, যা একটি ভয়াবহ চিত্র।
আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, শিশু বিবাহের মূল কারণগুলির মধ্যে রয়েছে দারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব, এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। অনেক দেশে, মেয়ে শিশুদের পরিবারের বোঝা হিসেবে দেখা হয় এবং তাদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়া হয়, যাতে পরিবারের আর্থিক চাপ কমে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, উন্নয়নশীল দেশগুলিতে মেয়ে শিশুদের স্কুলে যাওয়ার সুযোগ কম থাকে, যার ফলে তারা অল্প বয়সে বিবাহের ঝুঁকিতে পড়ে।
শিশু বিবাহের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে মেয়ে শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিত করা, বাল্যবিবাহ রোধে আইন প্রণয়ন, এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা। উদাহরণস্বরূপ, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-এর মধ্যে বাল্যবিবাহ নির্মূল করার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য রয়েছে। বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে বাল্যবিবাহ একটি সাধারণ সমস্যা, সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি যৌথভাবে কাজ করছে বাল্যবিবাহ কমাতে এবং মেয়ে শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে। এই প্রচেষ্টার ফলে, বাল্যবিবাহের হার কিছুটা কমেছে, তবে এখনও অনেক কাজ বাকি আছে। শিশু বিবাহের বিরুদ্ধে একটি সমন্বিত এবং আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন, যাতে প্রতিটি মেয়ে একটি সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ পায়।