১ জুলাই ২০২৫ তারিখে, মার্কো রুবিও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (USAID) বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পের "আমেরিকা ফার্স্ট" নীতির অংশ, যা বিদেশী সাহায্যের ক্ষেত্রে আরও কেন্দ্রীভূত ও লক্ষ্যভিত্তিক পন্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছে। উল্লেখ্য, এখন থেকে সমস্ত সহায়তা কর্মসূচি যা বর্তমান মার্কিন সরকারের নীতির বিরুদ্ধে নয়, তা সরাসরি পররাষ্ট্র দপ্তর দ্বারা বাস্তবায়িত হবে, USAID দ্বারা নয়।
USAID, যা ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, মার্কিন বিদেশ নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। এটি মানবিক সাহায্য প্রদান, অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রচার এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্য উদ্যোগ সমর্থনে কাজ করে আসছিল। এই সংস্থার বন্ধের পেছনে ছিল ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত নির্বাহী আদেশ ১৪১৬৯, যা সমস্ত মার্কিন বিদেশী উন্নয়ন সহায়তা পর্যালোচনার জন্য স্থগিত করেছিল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও উল্লেখ করেছেন যে ভবিষ্যতে মার্কিন সাহায্য সীমিত ও লক্ষ্যভিত্তিক হবে। এটি বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশগুলিকে ক্ষমতায়ন করার উপর জোর দেবে, বিশেষ করে আমেরিকান বেসরকারি খাতের স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত। এর মাধ্যমে চীনসহ বিশ্বব্যাপী প্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবেলা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
USAID এর বিলুপ্তি নিয়ে বিশ্বস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং মানবিক সংস্থাগুলোর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণায় সতর্ক করা হয়েছে যে অর্থায়ন কমিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৪ মিলিয়নেরও বেশি প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু ঘটতে পারে। ২০০১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে এই সংস্থার কর্মসূচি প্রায় ৯১.৮ মিলিয়ন মৃত্যু রোধে ভূমিকা রেখেছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লিউ. বুশ এবং বারাক ওবামা এই বন্ধের সমালোচনা করেছেন। তাঁরা এটিকে "একটি ট্রাজেডি" এবং আমেরিকার বৈশ্বিক দায়িত্বের বিরুদ্ধে বলে অভিহিত করেছেন। ওবামা USAID এর বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও উন্নয়নে অবদানকে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত মার্কিন বিদেশ নীতির পুনর্মূল্যায়নের প্রতিফলন। প্রশাসন দাবি করেছে যে এটি সাহায্যের কার্যকারিতা বাড়াবে, তবে সমালোচকরা বলছেন এটি বিশ্বস্বাস্থ্য ও উন্নয়নে অর্জিত অগ্রগতি ক্ষুণ্ন করতে পারে।