কানাডায় খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ভোক্তাদের বাজারের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য করছে।
২০২৫ সালের জুলাই মাসে, কানাডার প্রধান সুপারমার্কেট চেইন লোবলাউ ঘোষণা করেছে যে জুন মাসে খাদ্যপণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় ২.৮% বৃদ্ধি পেয়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধির ফলে অন্টারিও প্রদেশের বাসিন্দারা আরও সাশ্রয়ী বিকল্প খুঁজছেন। ভ্যাঙ্কুভারের বাসিন্দা কলিন রাসেল জানান, সুপারমার্কেটের উচ্চ মূল্যের কারণে কৃষকদের বাজার এখন তার প্রধান মুদিখানার উৎস।
ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রি-ফুড অ্যানালিটিক্স ল্যাবের পরিচালক সিলভেইন চার্লিবয়েস নিশ্চিত করেছেন যে জুনের মূল্যবৃদ্ধি ভোক্তাদের অভিজ্ঞতার প্রতিফলন। কানাডার খাদ্য মূল্যস্ফীতি জুন ২০২৫-এ ছিল ৩.৪%, যা মে মাসের ৩.৮% থেকে হ্রাস পেয়েছে। এই হ্রাসের প্রধান কারণ ছিল তাজা সবজির দাম কমে যাওয়া, শসা এবং পেঁয়াজের দাম যথাক্রমে ১০.৩% এবং ১৮.৩% কমেছে। তবে, মাংসের দাম এখনও বেশি, এবং ২০২৫ সালে ৪% থেকে ৬% বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। মাংসের দাম বৃদ্ধির প্রধান কারণ হলো পশ্চিম কানাডায় খরা, যার ফলে গরুর মাংসের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে, ফলে খামারিরা তাদের পশুর সংখ্যা হ্রাস করতে বাধ্য হচ্ছেন।
খাদ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেক কানাডিয়ান সস্তা বিকল্পের জন্য কৃষকদের বাজারের দিকে ঝুঁকছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলে অস্থিরতা এবং পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কারণে খাদ্যপণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে, ভোক্তাদের জন্য খাদ্য কেনার ক্ষেত্রে নতুন কৌশল অবলম্বন করা অপরিহার্য। উদাহরণস্বরূপ, স্থানীয় কৃষকদের বাজার থেকে সরাসরি কেনাকাটা করা, যা প্রায়শই সুপারমার্কেটের তুলনায় সস্তা। অথবা, খাদ্য অপচয় কমানোর জন্য পরিকল্পনা করে খাবার তৈরি করা যেতে পারে।
খাদ্যমূল্যের এই বৃদ্ধি কানাডার অর্থনীতিতে একটি গভীর প্রভাব ফেলছে। কম আয়ের পরিবারগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, কারণ তাদের আয়ের একটি বড় অংশ খাদ্যের জন্য ব্যয় করতে হচ্ছে। এর ফলে অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের কেনাকাটা কমে যেতে পারে, যা সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে প্রভাবিত করতে পারে। সরকার পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ভর্তুকি এবং খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ বিবেচনা করছে।