২০০৮ সালে, টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জাপান অরিগামি এয়ারপ্লেন অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় একটি অসাধারণ পরীক্ষা পরিচালনা করেছিলেন: আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে পুনঃপ্রবেশের সময় একটি কাগজের প্লেন বেঁচে থাকতে পারে কিনা তা যাচাই করা। এই প্রকল্পটি হালকা ওজনের পুনঃপ্রবেশ যান ডিজাইনে নতুন উদ্ভাবনী ধারণা উদ্দীপিত করার পাশাপাশি বিজ্ঞান সম্পর্কে জনসাধারণের আগ্রহ বাড়ানোর লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছিল।
উদ্যোগটি একটি তাপ প্রতিরোধী কাগজের প্লেন ডিজাইন করার উপর নির্ভর করেছিল, যা উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করার জন্য সিলিকন যৌগ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল আইএসএস থেকে এই প্লেনগুলো মুক্তি দিয়ে তাদের অবতরণ ও পুনঃপ্রবেশের সময় বেঁচে থাকার সম্ভাবনা পর্যবেক্ষণ করা, যা ভবিষ্যতের হালকা ওজনের পুনঃপ্রবেশ যান উন্নয়নে সহায়ক হবে।
একটি প্রোটোটাইপকে হাইপারসনিক উইন্ড টানেলে পরীক্ষা করা হয়েছিল, যেখানে এটি মাচ ৭ বেগ এবং প্রায় ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১২ সেকেন্ডের জন্য সহ্য করেছে। প্রকল্পটি কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, যেমন অবতরণের স্থান অনির্দেশ্য হওয়া এবং ট্র্যাকিং ব্যবস্থার অভাব। এসব সত্ত্বেও, এই ধারণাটি পুনঃপ্রবেশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আরও গবেষণার পথ প্রশস্ত করেছে।
জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত, কাগজের প্লেন পরীক্ষাটি মহাকাশে পরিচালিত হওয়ার কোনো প্রকাশ্য প্রতিবেদন নেই। তবে জুন ২০২৫ সালে, জাপান এয়ারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (জ্যাক্সা) একটি কঠিন এ্যারোডিসেলেরেটর সহ পুনঃপ্রবেশ ক্যাপসুলের পরীক্ষা করেছে বৈজ্ঞানিক বেলুন ফ্লাইটের মাধ্যমে, যা অবতরণের সময় গতিশীল স্থিতিশীলতা বুঝতে সাহায্য করেছে।
এই কাগজের প্লেন পরীক্ষা পুনঃপ্রবেশ প্রযুক্তিতে পরবর্তী গবেষণার জন্য একটি প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করেছে। ২০২৫ সালের জ্যাক্সার বেলুন ফ্লাইট নতুন পদ্ধতিতে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ ও অবতরণের অনুসন্ধান অব্যাহত রাখার প্রতিফলন। এই প্রচেষ্টা ২০০৮ সালের মূল প্রকল্পের ভিত্তিমূলক ধারণার ওপর নির্মিত, যা প্রাথমিক ধারণাটির দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবকে প্রদর্শন করে।