মহাকাশ অনুসন্ধানের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল প্লুটোর রঙিন ছবি প্রকাশ। নাসা-র নিউ হরাইজনস মহাকাশযানটি প্লুটোর সবচেয়ে নির্ভুল প্রাকৃতিক রঙের ছবি সরবরাহ করেছে, যা গ্রহটির পৃষ্ঠের বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরেছে। এই আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
নিউ হরাইজনস মিশনটি ২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করে এবং ২০১৫ সালে প্লুটোর কাছাকাছি পৌঁছায়। এই মিশনে ব্যবহৃত মাল্টিস্পেকট্রাল ভিজিবল ইমেজিং ক্যামেরা (MVIC) থেকে প্রাপ্ত ডেটা ব্যবহার করে এই ছবি তৈরি করা হয়েছে। MVIC ডেটার সূক্ষ্ম ক্রমাঙ্কনের ফলে প্রকৃত রঙের চিত্র পাওয়া গেছে, যা মানুষের চোখে দৃশ্যমান রঙের কাছাকাছি। ছবিতে প্লুটোর বিখ্যাত 'হার্ট'-আকৃতির অঞ্চল, স্পুটনিক প্ল্যানিশিয়ার গঠন এবং ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যগুলো স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
প্লুটোর পৃষ্ঠের এই ছবিগুলি গ্রহটির গঠন, ভূতত্ত্ব এবং বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে আমাদের ধারণা আরও গভীর করেছে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে প্লুটোর পৃষ্ঠে নাইট্রোজেন এবং মিথেনের একটি পাতলা বায়ুমণ্ডল রয়েছে, যা প্রায় ১,৬০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এছাড়াও, নিউ হরাইজনস মিশন প্লুটোর বুকে ৩,৫০০ মিটার উঁচু জল বরফের পর্বত আবিষ্কার করেছে। এই তথ্যগুলি সৌরজগতের বাইরের জগৎ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধি করে। এই মিশনের মাধ্যমে প্লুটোর পাঁচটি উপগ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে, যার মধ্যে অন্যতম হল ক্যারণ, যা প্লুটোর প্রায় অর্ধেক আকারের।
প্লুটোর এই রঙিন ছবিগুলি বিজ্ঞানীদের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে এবং মহাকাশ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক স্থাপন করেছে। এই ছবিগুলি আমাদের সৌরজগতের বাইরের জগৎ সম্পর্কে আরও বিস্তারিতভাবে জানতে সাহায্য করে।