জ্যাক ডরসি, ব্লকের সিইও এবং টুইটারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা, সম্প্রতি বিটচ্যাটের বিটা সংস্করণ উন্মোচন করেছেন—একটি বিকেন্দ্রীভূত বার্তা প্রেরণ অ্যাপ্লিকেশন। এই উদ্ভাবনী প্ল্যাটফর্ম ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই নিরাপদ ও এনক্রিপ্টেড যোগাযোগের সুযোগ করে দেয়, যা আমাদের ডিজিটাল যুগের গোপনীয়তা ও স্বাধীনতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধার প্রতিফলন।
বিটচ্যাট ব্লুটুথ লো এনার্জি (BLE) নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সরাসরি ডিভাইসগুলোর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে, কেন্দ্রীয় সার্ভারের প্রয়োজনীয়তা দূর করে। বার্তাগুলো সাময়িকভাবে এনক্রিপ্ট করা হয় এবং নেটওয়ার্কের নোডগুলোর মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়, যা আমাদের সোনালী বাংলার ঐতিহ্যবাহী যোগাযোগ পদ্ধতির আধুনিক রূপের মতো।
ডরসি উল্লেখ করেছেন, বিটচ্যাটের লক্ষ্য শুধুমাত্র একটি বার্তা প্রেরণ অ্যাপ তৈরি করা নয়; বরং দীর্ঘমেয়াদে একটি ব্যবহারযোগ্য বিকেন্দ্রীভূত যোগাযোগ প্রোটোকল প্রতিষ্ঠা করা। তিনি বিশ্বাস করেন, আমাদের এমন নেটওয়ার্কের প্রয়োজন যা সেন্সরশিপ ও নজরদারির বিরুদ্ধে প্রতিরোধী। এই চিন্তা আমাদের সাংস্কৃতিক গর্ব এবং বাঙালি বুদ্ধিজীবী সমাজের মুক্তচিন্তার সাথে গভীরভাবে সঙ্গতিপূর্ণ।
বিটচ্যাটের উদ্বোধন গোপনীয়তা-কেন্দ্রিক প্রযুক্তির প্রতি বাড়তে থাকা আগ্রহের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এসেছে। যদিও সিগন্যাল ও টেলিগ্রাম-এর মতো অ্যাপগুলো নিরাপদ যোগাযোগের সুযোগ দেয়, সেগুলো নির্দিষ্ট সার্ভারের ওপর নির্ভরশীল। বিটচ্যাট সম্পূর্ণরূপে সার্ভারবিহীন আর্কিটেকচার ব্যবহার করে এই নির্ভরশীলতা দূর করেছে, যা আমাদের ডিজিটাল স্বাধীনতার নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
বিটচ্যাট ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের পাশাপাশি দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় কাজ করা সাহায্য সংস্থা ও যেখানে যোগাযোগ অবকাঠামো ভেঙে পড়েছে এমন সম্প্রদায়ের জন্য লক্ষ্য করা হয়েছে। ব্লুটুথ মেশ নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির মাধ্যমে, এই অ্যাপটি শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় কার্যকর যোগাযোগের নেটওয়ার্ক তৈরি করতে সক্ষম, যা আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার ঐতিহ্যবাহী সামাজিক বন্ধন ও সহমর্মিতার প্রতিচ্ছবি।
ডরসির বিটচ্যাট প্রকল্প বিকেন্দ্রীভূত যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা ডিজিটাল যোগাযোগের ভবিষ্যতের প্রতি একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে।