১৯৯৯ সালের জেমস ম্যাঙ্গোল্ডের চলচ্চিত্র 'গার্ল, ইন্টারাপ্টেড' মানসিক স্বাস্থ্যের একটি শক্তিশালী চিত্র তুলে ধরে, যা সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সুসানা কাইসেনের স্মৃতিকথার উপর ভিত্তি করে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি ১৯৬৭ সালে একটি মানসিক হাসপাতালে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে তৈরি।
চলচ্চিত্রটি মানসিক স্বাস্থ্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে, যেমন বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার (বিপিডি) এবং তৎকালীন মানসিক চিকিৎসার পদ্ধতি। একটি গবেষণা অনুসারে, প্রায় ১.৪% প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বিপিডি-তে আক্রান্ত, যা এই চলচ্চিত্রের প্রাসঙ্গিকতা প্রমাণ করে । এছাড়াও, চলচ্চিত্রটি দেখায় কীভাবে সামাজিক পরিবেশ এবং আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্ক মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে, যা সামাজিক মনোবিজ্ঞানের একটি মূল বিষয়। মানসিক অসুস্থতা সম্পর্কিত সামাজিক কলঙ্ক (stigmatization) একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা সমাজে আজও বিদ্যমান।
উইনোনা রাইডার এবং অ্যাঞ্জেলিনা জোলির মতো তারকাবহুল অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয়ে সজ্জিত এই চলচ্চিত্রটি মানসিক হাসপাতালের ভেতরের সামাজিক গতিশীলতা বিশ্লেষণ করে। রোগীদের পারস্পরিক সম্পর্ক, তাদের ব্যক্তিগত সংগ্রাম এবং চিকিৎসার পদ্ধতি মানসিক স্বাস্থ্যের উপর সমাজের প্রভাব বুঝতে সাহায্য করে। 'গার্ল, ইন্টারাপ্টেড' শুধু একটি গল্প বলে না, বরং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
বাংলাদেশেও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে, তবে সামাজিক কলঙ্ক এখনো বিদ্যমান। 'গার্ল, ইন্টারাপ্টেড' মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতি সংবেদনশীলতা বাড়াতে এবং তাদের প্রতি সমাজের আরও সহানুভূতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে সহায়ক হতে পারে।