জার্মান বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের বিপরীতমুখীতাকে শব্দে রূপান্তরিত করেছেন, যা অতীতের জলবায়ু পরিবর্তনের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এই আবিষ্কার জলবায়ু পরিবর্তনের জটিল প্রক্রিয়াগুলি বুঝতে সাহায্য করবে।
পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র, যা গ্রহের অভ্যন্তরের গলিত ধাতুর চলনের ফলে উৎপন্ন হয়, আমাদের ক্ষতিকারক সৌর বিকিরণ থেকে রক্ষা করে। মেরু বিপরীতমুখীতার সময়, এই সুরক্ষা দুর্বল হয়ে যায়, যা সম্ভাব্য জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ হতে পারে। ইউরোপীয় জিওসায়েন্সেস ইউনিয়নের (ইজিইউ) সাধারণ সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা এই ঘটনাগুলির শব্দরূপ তৈরি করেছেন।
গবেষকরা একটি বিস্তারিত গ্লোবাল মডেল তৈরি করেছেন, যা প্রায় ৭,৮০,০০০ বছর আগে ঘটে যাওয়া ম্যাটায়ামা-ব্রুনহেস বিপরীতমুখীতার সময় পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রকে চিত্রিত করে। এই মডেলটিকে শব্দে রূপান্তরিত করা হয়েছে, যা বিজ্ঞানীদের অতীতের ঘটনাগুলি 'শুনতে' সাহায্য করে। এই শব্দরূপ বিশ্লেষণ করে জানা গেছে যে, মেরু বিপরীতমুখীতার সময় পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের তীব্রতা ৯০% পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে, যা পৃথিবীকে আরও বেশি সৌর বিকিরণের সম্মুখীন করে । এছাড়াও, এই গবেষণা থেকে জানা যায় যে, মেরু বিপরীতমুখীতা কয়েক হাজার বছর ধরে স্থায়ী হতে পারে, যা বিশ্বব্যাপী জলবায়ুকে প্রভাবিত করে ।
এই গবেষণা শুধু অতীতের জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে নতুন তথ্য সরবরাহ করে না, বরং ভবিষ্যতের গবেষণার জন্য নতুন পথ খুলে দেয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের বিপরীতমুখীতা কীভাবে জলবায়ুকে প্রভাবিত করে, তা ভালোভাবে বোঝা আমাদের ভবিষ্যৎ জলবায়ু পরিবর্তনগুলি আরও ভালোভাবে পূর্বাভাস দিতে এবং তাদের প্রভাবের জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করতে পারে। শব্দকে একটি গবেষণা সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহার করা বিজ্ঞানের উদ্ভাবনী ক্ষমতার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।