কানাডার বিজ্ঞানীরা একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন: তারা ২৪ মিলিয়ন বছর পুরনো একটি গন্ডারের দাঁত থেকে প্রোটিন নিষ্কাশন ও সিকোয়েন্সিং করতে সফল হয়েছেন। ৯ জুলাই, ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত এই আবিষ্কারটি প্রাচীন প্রোটিনের গবেষণা, বা প্যালিওপ্রোটিওমিক্সের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি চিহ্নিত করে।
দেখা যাচ্ছে, ডেভন দ্বীপের হাউটন ক্রেটার থেকে উদ্ধার করা গন্ডারের দাঁতটি গন্ডারের বিবর্তনীয় ইতিহাস সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য সরবরাহ করেছে। কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোব ইনস্টিটিউটের ড. রায়ান সিনক্লেয়ার প্যাটারসনের নেতৃত্বে গবেষকরা দাঁতের এনামেল বিশ্লেষণ করতে উন্নত কৌশল ব্যবহার করেছেন। প্রোটিনগুলির ব্যতিক্রমী সংরক্ষণের কারণ হলো হাউটন ক্রেটারের অনন্য পরিবেশগত পরিস্থিতি। এখানকার শীতল ও শুষ্ক জলবায়ু লক্ষ লক্ষ বছর ধরে প্রোটিনগুলিকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করেছে, যা একটি প্রাকৃতিক 'বায়োমলিকুলার ভল্ট'-এর মতো কাজ করেছে।
এই আবিষ্কারের ফলে বিজ্ঞানীরা এখন ডিএনএ-র চেয়েও স্থিতিশীল একটি পদ্ধতির মাধ্যমে অতীতের বিবর্তন অধ্যয়ন করতে পারবেন। ডিএনএ-র থেকে ভিন্ন, প্রোটিনগুলি উপযুক্ত পরিবেশে কয়েক মিলিয়ন বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে, যা গবেষকদের বিবর্তনীয় সম্পর্ক পুনর্গঠন করতে সাহায্য করবে।
এই আবিষ্কারের গুরুত্ব শুধু বৈজ্ঞানিক গবেষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি আমাদের পরিবেশ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাও মনে করিয়ে দেয়। বিশেষ করে, বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলি প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং মানবসৃষ্ট কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে, সেখানে এই ধরনের গবেষণা আমাদের ঐতিহ্য সংরক্ষণে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আবিষ্কার ভবিষ্যতের জীবাশ্ম গবেষণা এবং পৃথিবীর জৈবিক ও জলবায়ু ইতিহাস সম্পর্কে আরও গভীর অন্তর্দৃষ্টি দেবে।