প্রায় ২৮০০ বছর আগে প্রাচীন মিশরের কার্নাকের অমুন মন্দিরে পুরোহিত্রী ও গায়িকা মেরেসামুন সেবা দিতেন। আধুনিক সিটি স্ক্যান প্রযুক্তির সাহায্যে বিজ্ঞানীরা হাজার বছরেরও বেশি সময় পর তাঁর মুখের প্রতিকৃতি তৈরি করতে পেরেছেন এবং জানতে পেরেছেন তিনি কেমন দেখতে হতে পারেন।
মেরেসামুনের মমি পাওয়া গিয়েছিল ১৯২০ সালে আমেরিকান প্রত্নতত্ত্ববিদ জেমস হেনরি ব্রিস্টেডের সংগ্রহে থাকা একটি অমোচিত, সজ্জিত কফিনে। কফিনটি ফুল এবং ধর্মীয় প্রতীক দিয়ে সজ্জিত, যা এই মহিলার উচ্চ সামাজিক মর্যাদার ইঙ্গিত দেয়।
গবেষণার প্রধান লেখক ড. সিসেরো মোরায়েস মমির খুলি স্ক্যানের তথ্য ব্যবহার করে একটি ডিজিটাল মডেল তৈরি করেন। মুখের পুনর্গঠন করা হয় অ্যানাটমিক্যাল ডিফরমেশন পদ্ধতিতে, যা জীবিত দাতার মুখের আকৃতি মমির পরিমাপের সাথে মিলিয়ে নরম টিস্যুর পুরুত্বের চিহ্ন যোগ করে এবং পরবর্তীতে বিস্তারিত নিখুঁত করে।
ফলাফল একটি সঙ্গতিপূর্ণ ও শান্ত মুখ, যার বৈশিষ্ট্যগুলো মর্যাদা ও কোমলতা প্রকাশ করে। মেরেসামুন প্রায় ৩০ বছর বয়সে মারা গিয়েছিলেন এবং তাঁর উচ্চতা ছিল প্রায় ১৪৭ সেন্টিমিটার। মৃতদেহের অবস্থা নির্দেশ করে তিনি সুপুষ্ট ছিলেন এবং কোনো স্পষ্ট রোগের লক্ষণ ছিল না।
অমুন মন্দিরে গায়িকা-পুরোহিত্রীর ভূমিকা অত্যন্ত সম্মানিত ছিল, এবং মেরেসামুন সম্ভবত থিবসের একজন অভিজাত পরিবারের সদস্য ছিলেন, যেখানে এই পেশা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে হস্তান্তরিত হত।
এই আবিষ্কার আমাদের শুধু প্রাচীন মিশরের এক পুরোহিত্রীর রূপ সম্পর্কে ধারণা দেয় না, বরং সেই সময়ের সামাজিক কাঠামো ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বুঝতেও সাহায্য করে, যা আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত।