মিউনিখের লুডভিগ ম্যাক্সিমিলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় (LMU) এবং বাগদাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা প্রথম সহস্রাব্দ খ্রিস্টপূর্বের একটি স্তবক আবিষ্কার করেছেন। এই স্তবক, যা ২৫০ লাইন সমন্বিত, প্রাচীন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ নগরী বেবিলনের মহিমা উদযাপন করে এবং তার বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবনকে প্রতিফলিত করে।
স্তবকের পাঠে নগরীর স্থাপত্যিক বিস্ময়, বিশেষ করে তার বিখ্যাত নির্মাণসমূহের প্রশংসা করা হয়েছে, পাশাপাশি ইউফ্রেটিস নদীর বসন্তকালীন বন্যার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, যা অঞ্চলের উর্বরতা এবং কৃষির সমৃদ্ধি নিশ্চিত করত। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বেবিলনীয় নারীদের ধর্মীয় ভূমিকায়, বিশেষ করে তাদের পুরোহিত হিসাবে কার্যক্রমে, এবং বিভিন্ন জনসংখ্যার অংশের সামাজিক সহাবস্থান ও বিদেশীদের প্রতি সম্মানজনক মনোভাবের প্রতি।
এই আবিষ্কারে অনন্য ছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার। এআই অ্যালগরিদমের মাধ্যমে গবেষকরা স্তবকের সাথে সম্পর্কিত আরও ৩০টি পাণ্ডুলিপি সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন, যা হারিয়ে যাওয়া অংশসহ সম্পূর্ণ পাঠ পুনর্গঠন সম্ভব করেছে। এই প্রযুক্তিগত উন্নতি গবেষণাকে অনেক দ্রুততর করেছে, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য ছাড়া দশক সময় নিতে পারত।
এই আবিষ্কারসমূহ ২০২৫ সালে সম্মানিত বৈজ্ঞানিক জার্নাল "ইরাক"-এ প্রকাশিত হয়েছে। এগুলো বেবিলনীয় নগর সমাজের নতুন দিক উন্মোচন করেছে, আমাদের প্রাচীন মহানগরীর সংস্কৃতি, ধর্মীয় আচরণ এবং সামাজিক কাঠামোর জ্ঞান বৃদ্ধি করেছে, এবং নারীদের ধর্মীয় ও জনজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেছে।
বেবিলনের ধ্বংসাবশেষ, আধুনিক বাগদাদের প্রায় ৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত, ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। এই প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার তথ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে রয়ে গেছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গবেষকদের আকর্ষণ করে চলেছে।