ইতালীয় ও মিশরীয় বিশেষজ্ঞদের যৌথ প্রত্নতাত্ত্বিক অভিযান আসওয়ানের আগা খান স্মৃতিস্তম্ভের নিকটে হেলেনিস্টিক ও রোমান যুগের ৩৩টি পারিবারিক সমাধি আবিষ্কার করেছে।
৬ষ্ঠ শতক খ্রিস্টপূর্ব থেকে ৩য় শতক খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক স্তরের মানুষের জন্য পাথরে খোদাই করা এই সমাধিগুলো ব্যবহৃত হয়েছিল। ভিতরে পুরুষ, মহিলা ও শিশুদের মমি, চিত্রাঙ্কিত কাঠের কফিন, মৃতদেহের মুখোশ, মাটির পাত্র, টেরাকোটা মূর্তি এবং মণ্ডপের টেবিল পাওয়া গেছে, যা ঐতিহাসিক ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পরিচয় বহন করে।
গবেষকরা বিশেষভাবে সমাধি নম্বর ৩৮-এ মনোযোগ দিয়েছেন, যা তার উচ্চমানের সংরক্ষণ ও স্থাপত্য নকশার জন্য বিখ্যাত। এটি নয়টি ধাপ বিশিষ্ট ইটের সিঁড়ি দিয়ে প্রবেশযোগ্য, এবং প্রধান কক্ষে প্রায় দুই মিটার উঁচু চুনাপাথরের সর্কোফ্যাগাস রয়েছে। এর ঢাকনা আদর্শায়িত মানব মুখের আকারে, এবং পাশের অংশে স্থানীয় দেবতাদের উদ্দেশ্যে প্রার্থনার শিলালিপি খোদাই করা হয়েছে।
সমাধির শিলালিপি অনুযায়ী, এর মালিক ছিলেন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কা-মেসিউ, যিনি তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সমাধিস্থ হয়েছেন। এটি পরিবারিক স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে এই জটিলটির ব্যবহারের প্রমাণ দেয়। সমাধি থেকে সংগৃহীত উপাদানগুলি গবেষকদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পুনর্গঠন এবং ঐ সময়ের সমাধি ব্যবস্থাপনা বোঝাতে সাহায্য করে।
এই আবিষ্কার প্রাচীন আসওয়ানের সামাজিক স্তরবিন্যাসের ওপরও আলোকপাত করেছে। প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, অভিজাতরা পাহাড়ের উপরের অংশে সমাধিস্থ হয়েছিল, আর মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সমাধি ছিল এর ঢালে। কিছু সমাধি পরবর্তী সময়েও পুনঃব্যবহৃত হয়েছে, যা বিভিন্ন প্রজন্মের জন্য এই সমাধিক্ষেত্রের দীর্ঘমেয়াদী গুরুত্ব নির্দেশ করে।