প্রত্নতত্ত্ববিদরা কান কটার (ইরানের কুর্দিস্তান)-এ লৌহ যুগের একটি সমাধিস্থলে খননকার্য চালানোর সময় প্রাচীন কালের কাজলের একটি নমুনা আবিষ্কার করেছেন। সমাধিস্থলটি খ্রিস্টপূর্ব ৯ম–৭ম শতাব্দীর এবং এটি ছিল অ্যাসেরীয় সাম্রাজ্যের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত। সমাধিস্থলে অস্ত্রশস্ত্র, গয়না এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির সামগ্রী-সহ মূল্যবান জিনিসপত্র পাওয়া গেছে, যা ইঙ্গিত করে যে এখানে সমাধিস্থ ব্যক্তিরা সমাজের অভিজাত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
একটি মৃৎপাত্রে কালো, গুঁড়ো আকারের একটি পদার্থ ছিল। বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, এটি ম্যাঙ্গানিজ অক্সাইড এবং প্রাকৃতিক গ্রাফাইট দিয়ে তৈরি কাজল – যা আগে অজানা ছিল। প্রাচীন বিশ্বে, বিশেষ করে মিশরে, সৌন্দর্য এবং চিকিৎসার জন্য কাজলের ব্যাপক ব্যবহার ছিল। মিশরীয় রেসিপিগুলিতে ম্যালাকাইট, গ্যালেনা এবং সীসার যৌগ ব্যবহার করা হত।
কানি কটার থেকে প্রাপ্ত কাজলের কালো রঙ পাইরোলুসাইট (ম্যাঙ্গানিজ সমৃদ্ধ) এবং গ্রাফাইট (কার্বন থেকে উৎপন্ন) থেকে পাওয়া গেছে, যা কাজলে গ্রাফাইটের প্রথম নথিভুক্ত ব্যবহার। এটি আঞ্চলিক সম্পদের সঙ্গে অভিযোজনের ইঙ্গিত দেয় – কানি কটারের কাছে জাগ্রোস পর্বতমালা ম্যাঙ্গানিজ এবং গ্রাফাইটে সমৃদ্ধ।
কাজলযুক্ত পাত্রটি রুপোর গয়না, ব্রোঞ্জের আয়না এবং হাতির দাঁতের তৈরি অ্যাপ্লিকেটরের সঙ্গে পাওয়া গেছে। এটি লৌহ যুগের অভিজাতদের – পুরুষ এবং মহিলা উভয়কেই – চেহারা এবং স্বাস্থ্যবিধির প্রতি বিশেষ মনোযোগের ইঙ্গিত দেয়।
এই আবিষ্কারটি কেবল এর গঠনে অনন্য নয়, বরং লৌহ যুগের নান্দনিক এবং সাংস্কৃতিক আদর্শের উপরও আলোকপাত করে। গ্রাফাইটের ঔজ্জ্বল্য এবং ম্যাঙ্গানিজের গভীর কালো রঙের মাধ্যমে, মানুষ তাদের স্বতন্ত্রতা, সৌন্দর্য এবং সামাজিক মর্যাদার উপর জোর দিত।