জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাসস্থানের ধ্বংসের ফলে বিপন্ন উদ্ভিদ প্রজাতিগুলোর সংরক্ষণে নতুন একটি মুক্ত-সোর্স কাঠামো সংরক্ষণবিদদের সাহায্য করছে বীজ ব্যাংকে জেনেটিক বৈচিত্র্যের প্রতিনিধিত্ব মূল্যায়নে। এটি আমাদের পরিবেশ ও খাদ্য ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে, যেখানে কৃষি ও প্রকৃতির সাথে মানুষের গভীর সম্পর্ক রয়েছে, প্রাকৃতিক উদ্ভিদ বৈচিত্র্য রক্ষা আমাদের সাংস্কৃতিক গর্বের অংশ। তথাপি, বন্য উদ্ভিদ প্রজাতির মাত্র ২০% এর কম যথাযথভাবে এই ধরনের বহির্গত সংরক্ষণে অন্তর্ভুক্ত।
মরক্কোর ইউনিভার্সিটি মোহাম্মেদ VI পলিটেকনিকের পিএইচডি গবেষক মারওয়া এল গ্রাউই একটি কাঠামো তৈরি করেছেন যা প্রকাশ্যে উপলব্ধ তথ্য, ভূ-স্থানিক মডেলিং এবং ব্যবহার-বান্ধব সফটওয়্যার ব্যবহার করে বীজ ব্যাংকে জেনেটিক বৈচিত্র্যের প্রতিনিধিত্ব মূল্যায়ন করে। এর মাধ্যমে জরুরি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় প্রজাতিগুলোর অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা যায়।
এল গ্রাউইর কাজ ভিগনা জাতের উপর কেন্দ্রীভূত হলেও, এই পদ্ধতি যেকোনো উদ্ভিদ গোষ্ঠীর জন্য প্রযোজ্য। এটি জেনেটিক পার্থক্যের জন্য ভৌগলিক ও পরিবেশগত দূরত্বকে ব্যবহার করে, বিশেষ করে সরাসরি জেনোমিক তথ্য না থাকলে। এটি 'দূরত্ব দ্বারা বিচ্ছিন্নতা' তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে, যেখানে দূরে থাকা জনসংখ্যাগুলো জেনেটিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়।
প্রজাতির সীমা নির্ধারণে, এল গ্রাউই ও তার সহ-লেখক একটি "সংশোধিত সীমা" পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন, যা প্রমাণিত উপস্থিতি অঞ্চলের অন্তর্ভুক্তির জন্য বাফার এবং সম্ভাব্য নয় এমন অঞ্চল বাদ দেওয়ার জন্য বাফার ব্যবহার করে। তারা বহির্গত সংগ্রহের তথ্যের ভুলত্রুটিও সমাধান করেছেন, যা সংরক্ষণ মূল্যায়নে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
পুরো প্রক্রিয়াটি একটি মুক্ত-সোর্স R লাইব্রেরিতে প্যাকেজ করা হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী গবেষকদের জন্য সহজলভ্য। ব্যবহারকারীরা উপস্থিতির স্থানাঙ্ক এবং জলবায়ু পরিবর্তনশীল ইনপুট দিয়ে প্রতিটি প্রজাতির জন্য সংরক্ষণ স্কোর তৈরি করতে পারেন। এই মুক্ত-সোর্স উদ্যোগ আফ্রিকার তথ্য ও ডিজিটাল সরঞ্জাম ব্যবহার করে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার UM6P-এর দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এই উদ্ভাবনী কাঠামো বীজ ব্যাংকে জেনেটিক বৈচিত্র্যের প্রতিনিধিত্ব উন্নত করার জন্য একটি ব্যবহারিক হাতিয়ার প্রদান করে। এটি উদ্ভিদ সংরক্ষণের জরুরি সমস্যার জন্য একটি বিস্তৃত ও সহজলভ্য সমাধান, যা আমাদের পরিবেশ এবং মানব সমাজের জন্য উপকারি। জেনেটিক বৈচিত্র্যের প্রতিনিধিত্ব বাড়িয়ে আমরা উদ্ভিদ প্রজাতিগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারি এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের খাদ্য নিরাপত্তার স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে সক্ষম হব।