দক্ষিণ ইউরোপ বর্তমানে তীব্র তাপপ্রবাহের সম্মুখীন হচ্ছে, যা অঞ্চলের জনসংখ্যা এবং পরিবেশের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে যুক্ত এই চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলো ক্রমশ আরও ঘন ঘন এবং গুরুতর হয়ে উঠছে।
ইটালি ২৫শে জুন ক্যাপানা মার্গারিটাতে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪,৫৫৪ মিটার উচ্চতায় ৯.৫°C তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। ২৬শে জুন বোলোগনা ৩৮.২°C তে পৌঁছেছিল, যা শহরটির জন্য জুন মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড। ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রক রোম এবং মিলান সহ ২৭টি পর্যবেক্ষণ করা শহরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে।
গ্রিস ২২শে জুন চিয়োস দ্বীপে দাবানলের সম্মুখীন হয়েছিল, যার ফলে ১৭টি সম্প্রদায়ের মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়। একই সময়ে, পালায়া ফোকাইয়া এবং থাইমারিতে কমপক্ষে ২০টি বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়, ১,০০০ জনেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ২৭শে জুন এথেন্সে তাপমাত্রা ৪০°C ছাড়িয়ে যায়, যা পর্যটক এবং স্থানীয়দের আশ্রয় নিতে বাধ্য করে।
স্পেন ১৯শে জুন হুয়েলভা-তে ৪০.০°C সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। ২১শে জুন কর্ডোবা ৪২.০°C তে পৌঁছেছিল এবং একজন ৫৮ বছর বয়সী ব্যক্তি এই বছর আন্দালুসিয়ার প্রথম হিটস্ট্রোকের শিকার হন। পর্তুগালের লিসবনে ২৮শে জুন দিনের বেলা তাপমাত্রা ৪২°C এর উপরে উঠেছিল। রবিবার চরম তাপ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকির কারণে পর্তুগালের দুই-তৃতীয়াংশ জুড়ে উচ্চ-স্তরের সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা এই ক্রমবর্ধমান ঘন ঘন এবং তীব্র তাপপ্রবাহের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন এবং দক্ষিণ ইউরোপে আরও চরম আবহাওয়ার ঘটনার বিষয়ে সতর্ক করছেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত ২০ বছরে ইউরোপে তাপপ্রবাহ-সম্পর্কিত মৃত্যুহার ৩০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও, অতিরিক্ত জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে, এই শতাব্দীর শেষে ইউরোপে চরম তাপমাত্রা ২.৩ মিলিয়ন পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এই তাপপ্রবাহগুলি চরম আবহাওয়ার ঘটনার ক্রমবর্ধমান ফ্রিকোয়েন্সি থেকে জনসংখ্যা এবং পরিবেশকে রক্ষা করার জন্য জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধ এবং অভিযোজনমূলক পদক্ষেপের জরুরি প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।