2011 সালের NASA-র মার্স রিকনাইসেন্স অরবিটার (Mars Reconnaissance Orbiter) থেকে তোলা একটি ছবি মঙ্গলে অতীতের জীবনের সম্ভাব্য লক্ষণ নিয়ে বিতর্ক ফের উস্কে দিয়েছে। ছবিতে লিবিয়া মন্টস হাইল্যান্ড (Libya Montes highland) অঞ্চলে একটি ল্যান্ডমার্ক (landmark) দেখা যায়, যা কিছু পর্যবেক্ষকের মতে একটি 'বিস্ময়সূচক চিহ্নের' মতো। এর ফলে আলোচনা শুরু হয়েছে যে এটি কোনও হারিয়ে যাওয়া এলিয়েন সভ্যতার প্রমাণ হতে পারে নাকি এটি কেবল প্রাকৃতিক ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার ফল।
সিডোনিয়া ইনস্টিটিউটের (The Cydonia Institute) জর্জ জে. হাস (George J. Haas) এই তত্ত্বের একজন প্রবক্তা। তিনি মনে করেন যে জ্যামিতিকভাবে ডিজাইন করা গঠনগুলি বুদ্ধিমান নির্মাণের ইঙ্গিত দেয়। তিনি যুক্তি দেন যে এত নিখুঁত জ্যামিতিক আকার প্রাকৃতিকভাবে ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম।
তবে, সংশয়বাদীরা এই ধরনের পর্যবেক্ষণকে 'প্যারেডোলিয়া' (pareidolia) বলে মনে করেন। এটি একটি মনস্তাত্ত্বিক ঘটনা, যেখানে মানুষের মস্তিষ্ক এলোমেলো ছবিতে পরিচিত প্যাটার্ন খুঁজে পায়। এই কারণে মানুষ মেঘ, পাথর বা অন্যান্য নির্জীব বস্তুর মধ্যে মুখ বা জিনিস দেখতে পায়। NASA প্যারেডোলিয়ার ঘটনাটি নিয়েও আলোচনা করেছে। তারা ব্যাখ্যা করেছে যে আমাদের মস্তিষ্ক পরিচিত আকার খুঁজে বের করার জন্য তৈরি, যার ফলে মাঝে মাঝে মঙ্গল গ্রহের দৃশ্যাবলীর ভুল ব্যাখ্যা হতে পারে।
মঙ্গলে অনুরূপ পর্যবেক্ষণের মধ্যে রয়েছে পিরামিড আকৃতির কাঠামো, যেমন 1972 সালে কার্ল সাগান (Carl Sagan) কর্তৃক চিহ্নিত 'সাগান পিরামিড' (Sagan Pyramids), এবং অন্যান্য জ্যামিতিক প্যাটার্ন যা কারও কারও মতে প্রাচীন শহরের মতো। এই পর্যবেক্ষণগুলি মঙ্গল গ্রহের সভ্যতা সম্পর্কে জল্পনা বাড়িয়ে তুললেও, বিজ্ঞানীরা মূলত এটিকে প্যারেডোলিয়া এবং প্রাকৃতিক ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ার ফল বলে মনে করেন।