সমুদ্রের গভীরে, যেখানে জীবনের এক বিশাল জগৎ বিদ্যমান, সেখানে ব্যাকটেরিয়া এবং ফাইটোপ্লাঙ্কটনের মধ্যেকার সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই দুটি ক্ষুদ্র জীব কীভাবে একে অপরের সাথে সহযোগিতা করে, তা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যাকটেরিয়া, ভিটামিন বি১২-এর মতো প্রয়োজনীয় উপাদান তৈরি করে, যা ফাইটোপ্লাঙ্কটনের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ফাইটোপ্লাঙ্কটন, যা সূর্যের আলো ব্যবহার করে খাদ্য তৈরি করে, ব্যাকটেরিয়ার জন্য কার্বন সরবরাহ করে। এই পারস্পরিক নির্ভরশীলতা সমুদ্রের খাদ্য শৃঙ্খলের ভিত্তি তৈরি করে। সম্প্রতি, বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, কিছু বিশেষ ব্যাকটেরিয়া ফাইটোপ্লাঙ্কটনের বৃদ্ধিকে প্রায় ২০% পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে, যা সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অন্যদিকে, পরিবেশ দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই সূক্ষ্ম সম্পর্কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, কীটনাশক এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ ব্যাকটেরিয়ার কার্যক্রমকে ব্যাহত করতে পারে, যা ফাইটোপ্লাঙ্কটনের বৃদ্ধি কমিয়ে দিতে পারে। এছাড়াও, সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে ব্যাকটেরিয়ার কার্যকারিতা হ্রাস পায়, যা ফাইটোপ্লাঙ্কটনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বিজ্ঞানীরা বর্তমানে এই সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করছেন, যাতে সমুদ্রের পরিবেশকে রক্ষা করা যায়। এই বিষয়ে, কলকাতার একটি গবেষণা কেন্দ্র, সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে একটি বিশেষ প্রকল্প শুরু করেছে, যার প্রাথমিক ফলাফল ২০২৩ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।
সুতরাং, ব্যাকটেরিয়া এবং ফাইটোপ্লাঙ্কটনের মধ্যেকার সম্পর্ক বোঝা সমুদ্রের স্বাস্থ্য এবং ভবিষ্যতের জন্য অপরিহার্য। এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আমরা সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে পারি।