ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০৩০ সালের মধ্যে সমুদ্র শক্তি সহ নতুন পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎস থেকে ৫% ক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্য নিয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনে সমুদ্র শক্তির গুরুত্ব অপরিসীম। এই নিবন্ধে, আমরা সমুদ্র শক্তির সম্ভাবনা, সুবিধা এবং চ্যালেঞ্জগুলি নিয়ে আলোচনা করব, বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে।
সমুদ্র শক্তি মূলত তিনটি প্রধান রূপে বিদ্যমান: জোয়ারের শক্তি, ঢেউয়ের শক্তি এবং সমুদ্র তাপীয় শক্তি। জোয়ারের শক্তি, যা সমুদ্রের জলের উচ্চতা পরিবর্তনের মাধ্যমে উৎপাদিত হয়, তা উপকূলীয় অঞ্চলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস হতে পারে। ঢেউয়ের শক্তি, যা সমুদ্রের ঢেউয়ের গতি ব্যবহার করে, এটি একটি স্থিতিশীল এবং পূর্বাভাসযোগ্য শক্তি সরবরাহ করতে পারে। সমুদ্র তাপীয় শক্তি, যা সমুদ্রের উপরিভাগের উষ্ণতা এবং গভীরের শীতলতার মধ্যে পার্থক্য ব্যবহার করে, এটি একটি বিশাল সম্ভাবনা ধারণ করে।
সমুদ্র শক্তি প্রযুক্তি বর্তমানে উন্নত দেশগুলিতে, বিশেষ করে ইউরোপে, দ্রুত বিকাশ লাভ করছে। ইউরোপীয় কমিশন সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে এই খাতে বিনিয়োগের জন্য উৎসাহিত করছে। এই ধরনের বিনিয়োগগুলি কেবল পরিবেশগত সুবিধার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি নতুন শিল্প এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও সাহায্য করে। বাংলাদেশেও সমুদ্র শক্তির সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে। কক্সবাজার এবং সুন্দরবনের মতো অঞ্চলে জোয়ার-ভাটার শক্তি এবং ঢেউয়ের শক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে।
তবে, সমুদ্র শক্তি ব্যবহারের কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা, উচ্চ প্রাথমিক খরচ এবং পরিবেশগত প্রভাবগুলি বিবেচনা করা প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, সমুদ্রের জীববৈচিত্র্যের উপর সম্ভাব্য প্রভাবগুলি মূল্যায়ন করতে হবে। এই চ্যালেঞ্জগুলি সত্ত্বেও, সমুদ্র শক্তি ভবিষ্যতের জন্য একটি উজ্জ্বল সম্ভাবনা নিয়ে আসে। এটি কার্বন নিঃসরণ কমাতে, জ্বালানি নিরাপত্তা বাড়াতে এবং একটি সবুজ অর্থনীতির দিকে অগ্রসর হতে সাহায্য করতে পারে। বাংলাদেশের জন্য, সমুদ্র শক্তি একটি টেকসই এবং নির্ভরযোগ্য শক্তি সমাধানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে।