মিশরের গিজার মহান পিরামিডের ভেতর সম্প্রতি পাওয়া পুরাতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলি এর নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে নতুন আলোকপাত করেছে, যা দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত নির্মাণকারীদের ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
মিশরীয় পুরাতত্ত্ববিদ ড. জাহি হাওয়াস এবং তাঁর দল পিরামিডের ভেতরে ১৩ শতক খ্রিস্টপূর্বের প্রাচীন শিলালিপি আবিষ্কার করেছেন, যা নির্দেশ করে যে নির্মাণে দাসদের পরিবর্তে দক্ষ কারিগররা নিয়োজিত ছিলেন। এই শিলালিপিগুলো রাজা কক্ষের উপরের সরু কক্ষগুলোতে উন্নত ইমেজিং প্রযুক্তির মাধ্যমে পাওয়া গেছে।
এই চিহ্নগুলোতে "পিরামিডের পাশের তত্ত্বাবধায়ক" ও "কারিগর" নামক কাজের দলের পদবী উল্লেখ রয়েছে। পিরামিডের দক্ষিণে নির্মাণকারীদের চিরশান্তির জন্য নির্মিত সমাধিসৌধও আবিষ্কৃত হয়েছে।
সমাধিসৌধগুলিতে শ্রমিকদের পাথর বহনের মূর্তি এবং হায়ারোগ্লিফিক শিরোনাম রয়েছে, যা নির্মাণকারীদের পেশাদার শ্রমিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। এই আবিষ্কারগুলি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত ধারণা যে মহান পিরামিড দাসদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল, তা চ্যালেঞ্জ করে।
দলটি কাছাকাছি খনন ক্ষেত থেকে চুনাপাথর পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত পাথর ও কাদামাটির একটি ঢালু পথের অবশিষ্টাংশও পেয়েছে। ড. হাওয়াস একটি নতুন অভিযান পরিকল্পনা করছেন, যা বেল-এর অর্থায়নে পরিচালিত হবে এবং এতে একটি রোবট মহান পিরামিডের ভেতরে পাঠানো হবে, যা আধুনিক সময়ে এই স্থাপত্যের প্রথম খনন কাজ হবে।
ফারাও খুফুর অধীনে চতুর্থ রাজবংশের পুরানো রাজ্যের সময় নির্মিত গিজার মহান পিরামিড প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার একটি প্রতীকী চিহ্ন। এই আবিষ্কারগুলি এর নির্মাণ ও নির্মাণকারীদের সম্পর্কে আরও গভীর ও সংবেদনশীল উপলব্ধি প্রদান করে, যা আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার ঐতিহ্যবাহী শিল্প ও কারিগরদের প্রতি গর্বের সাথে সাদৃশ্য রেখে।