রাতের পর্যটন, বা 'নকটার্নিজম', বর্তমানে একটি আকর্ষণীয় বিষয়, যা ভ্রমণকারীদের জন্য রাতের বেলা বিভিন্ন গন্তব্য অন্বেষণের সুযোগ করে দিচ্ছে। রাতের পর্যটনের ধারণাটি প্রকৃতি প্রেমীদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করছে, কারণ এটি রাতের আকাশের তারা দেখা থেকে শুরু করে বন্যজীবন পর্যবেক্ষণ পর্যন্ত বিভিন্ন অভিজ্ঞতা প্রদান করে। এই পর্যটন বর্তমানে কিভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করছে, তার কিছু দিক তুলে ধরা হলো।
পর্যটন শিল্পের সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে, রাতের পর্যটনের বাজার গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে, পূর্ব আফ্রিকার মাসাই মারার মতো স্থানে রাতের বেলা বন্যজীবন দেখার জন্য পর্যটকদের আগ্রহ বেড়েছে, যা স্থানীয় অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। উদাহরণস্বরূপ, মাসাই মারায় রাতের বেলা সাফারি ট্যুরগুলি পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে, যা স্থানীয় গাইড এবং হোটেলগুলির জন্য আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এছাড়াও, রাতের বেলায় বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ পর্যটকদের আকর্ষণ করে, যা দিনের বেলায় দেখা যায় না।
অন্যদিকে, বোর্নিও-র রেইনফরেস্টগুলিতে রাতের বেলা ভ্রমণের সুযোগ পর্যটকদের কাছে এক নতুন অভিজ্ঞতা। সাবা-র ডানুম ভ্যালি কনজারভেশন এরিয়ার মতো স্থানে রাতের ট্যুরগুলি টার্সিয়ার এবং মেঘাচ্ছন্ন চিতাবাঘের মতো বিভিন্ন প্রজাতির সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়। এই ধরনের অভিজ্ঞতা পর্যটকদের বন্যজীবন এবং প্রকৃতির প্রতি আরও আগ্রহী করে তোলে। পর্যটকদের সুবিধার জন্য, স্থানীয় সরকার এবং পর্যটন সংস্থাগুলি রাতের পর্যটনের জন্য উপযুক্ত অবকাঠামো তৈরি করছে, যেমন রাতের বেলায় ভ্রমণের জন্য নিরাপদ পথ এবং পরিবেশ-বান্ধব আলো স্থাপন করা হচ্ছে।
ভারতে, রাতের পর্যটনের ধারণাটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তবে বিভিন্ন রাজ্যে এর সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, রাজস্থান এবং কেরালার মতো রাজ্যে রাতের বেলা বিভিন্ন উৎসব এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। রাতের পর্যটনের বিকাশের জন্য, স্থানীয় সরকার এবং পর্যটন সংস্থাগুলিকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, যাতে পর্যটকদের জন্য নিরাপদ এবং আকর্ষণীয় অভিজ্ঞতা তৈরি করা যায়। রাতের পর্যটন একটি নতুন দিগন্ত, যা পর্যটন শিল্পে আরও বৈচিত্র্য আনতে পারে।