বিবাহ অনেকের কাছেই একটি গুরুত্বপূর্ণ জীবন লক্ষ্য, তবে উচ্চ মাধ্যমিকের পরেই অভিভাবকদের অনুমোদন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে কাজ করে সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক প্রেক্ষাপট। তরুণ প্রজন্মের মানসিকতা, আবেগ এবং সমাজের প্রত্যাশাগুলি এখানে আলোচনা করা হলো।
উচ্চ মাধ্যমিকের পর বিবাহ নিয়ে অভিভাবকদের উদ্বেগের মূল কারণগুলির মধ্যে একটি হল মানসিক পরিপক্কতার অভাব। এই বয়সে ছেলেমেয়েরা নিজেদের পরিচয় এবং মানসিক স্থিতিশীলতা নিয়ে দ্বিধায় থাকে। বিবাহ জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় মানসিক পরিপক্কতা তাদের মধ্যে তখনও সম্পূর্ণরূপে নাও থাকতে পারে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের আবেগ এবং আচরণ এই বয়সে দ্রুত পরিবর্তন হয়, যা বিবাহিত জীবনের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আর্থিক প্রস্তুতি। অনেক তরুণ-তরুণী উচ্চ মাধ্যমিকের পর আর্থিক দিক থেকে বাবা-মায়ের উপর নির্ভরশীল থাকে। বিয়ের খরচ এবং সংসারের দায়িত্ব নেওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য তাদের থাকে না। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, তরুণ দম্পতিদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম প্রধান কারণ হল আর্থিক চাপ।
এছাড়াও, অল্প বয়সে বিয়ে করলে শিক্ষাজীবনে ব্যাঘাত ঘটে। অনেক ক্ষেত্রে, পড়াশোনা এবং ক্যারিয়ারের সুযোগ কমে যায়। সামাজিক-মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে, অভিভাবকদের এই সিদ্ধান্তগুলো তাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের সুরক্ষার জন্য নেওয়া হয়। এটি কেবল একটি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, বরং সামাজিক প্রেক্ষাপটে এর গভীর প্রভাব রয়েছে। অভিভাবকদের মূল লক্ষ্য থাকে, তাদের সন্তানরা যেন জীবনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে ভালোভাবে প্রস্তুত হয়ে তবেই বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করে।
সুতরাং, উচ্চ মাধ্যমিকের পর বিবাহ একটি জটিল বিষয়। অভিভাবকদের উচিত তাদের সন্তানদের মানসিক ও আর্থিকভাবে প্রস্তুত করতে সাহায্য করা। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এই ক্ষেত্রে জরুরি। একটি সুস্থ ও সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য প্রয়োজন সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া।