ভারতীয় জ্ঞান পদ্ধতি (IKS), যা ভারতীয় উপমহাদেশের সহস্রাব্দের জ্ঞান ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধ সংগম, বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পুনর্জাগরণ লাভ করছে, বিশেষ করে ২০২০ সালের জাতীয় শিক্ষা নীতির (NEP) প্রভাবে। এই পদ্ধতিতে দর্শন, বিজ্ঞান, শিল্প, স্বাস্থ্য ও নৈতিকতা সহ বিভিন্ন শাখার অন্তর্ভুক্তি রয়েছে, যা জীবনের প্রতি একটি সামগ্রিক ও সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে। NEP ২০২০ আধুনিক শিক্ষায় IKS সংযোজনের গুরুত্বকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন সূচিত করেছে।
ঐতিহাসিকভাবে, IKS বিভিন্ন ক্ষেত্রে গভীর অবদান রেখেছে। দর্শন ও যুক্তিতে, বেদান্ত, ন্যায় ও মীমাংসার মত বিদ্যালয়গুলি অত্যন্ত প্রভাবশালী। গণিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞানে অর্যভট্ট ও ব্রহ্মগুপ্তের মতো মহৎ ব্যক্তিত্বরা যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন। আয়ুর্বেদ, চরক ও শুশ্রুত সংহিতার মতো মৌলিক গ্রন্থের মাধ্যমে সামগ্রিক স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছে। পাণিনির *অষ্টাধ্যায়ী* ভাষাতত্ত্বের একটি মূর্ত স্তম্ভ, যা সংস্কৃত ব্যাকরণের একটি বিস্তৃত কাঠামো প্রদান করে।
আধুনিক শিক্ষায় IKS সংযোজনের প্রচেষ্টা বহুমুখী। পাঠ্যক্রম সংস্কারে কাজ চলছে, যেখানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বিভিন্ন শাখায় IKS ভিত্তিক ইউনিট চালু করা হচ্ছে। ভারতীয় সমাজবিজ্ঞান গবেষণা পরিষদ (ICSSR) IKS ভিত্তিক গবেষণা প্রচারের জন্য কর্মশালা ও সম্মেলন আয়োজন করছে। শিক্ষা মন্ত্রকের IKS বিভাগ আধুনিক শাখাসমূহ অন্তর্ভুক্ত করে তার পরিধি বিস্তৃত করছে, যা আন্তঃশাখাগত সহযোগিতা উৎসাহিত করছে। এই পন্থা ঐতিহ্যবাহী জ্ঞানকে আধুনিক বিষয়ের সাথে মিশ্রিত করে টেকসই অনুশীলন, পরিবেশবান্ধব স্থাপত্য, এবং মানসিক সুস্থতা থেরাপি যেমন যোগ ও মনোযোগ অনুশীলনে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। তদুপরি, শিক্ষাব্যবস্থায় স্বদেশী ভাষা ও ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলা সংরক্ষণ ও প্রচারে ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।